বিজ্ঞান ব্লগ

কি হবে যদি কেউ সাপের ডিম খেয়ে ফেলে?

বর্তমান সময়ে মানুষ তাদের খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য  কোন প্রাণীর সকল অংশই খেয়ে থাকে। এ মধ্য থেকে প্রাণীদের ডিম ও  বাদ যায় না।

আমরা যেমন হাঁস বা মুরগির ডিম খেয়ে থাকি, তেমনি অনেক লোকেরা সরীসৃপ প্রাণীদের ডিমও  খেয়ে থাকেন । যেটা হয়তোবা আমাদেরকে আশ্চর্যান্বিত করে।

তবে আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে জিনিসটা আমাদের কাছে বিস্বাদ সেটা অন্য কারো কাছে সুস্বাদু হতে পারে। এই আর্টিকেলের আমরা জানব সাপের ডিম সম্পর্কে, যদি সাপের ডিম আমরা খেয়ে ফেলে তাহলে কি হবে , এবং কোথায় কোথায় সাপের ডিম খাওয়া হয় ইত্যাদি সম্পর্কে।

সাপের ডিম কি খাওয়ার যোগ্য?

যদি প্রশ্ন করা হয় সাপের ডিম খাওয়া যাবে কিনা, তবে এর উত্তর হবে হ্যাঁ!  আপনি সাপের ডিম খেতে পারেন তবে এর জন্য আপনাকে এটা কে  সঠিকভাবে  ভেজে নিতে হবে । বস্তুত হাঁস মুরগির ডিম খাওয়া  আর সাপের ডিম খাওয়ার মধ্যে তেমন কোন তফাৎ নেই!!

সাপের ডিমেও হাঁস মুরগির ডিমের মতো উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং নিউট্রিশনস আছে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে হাঁস মুরগির ডিমের মতো সাপের ডিম ও ব্রেকফাস্ট এবং অন্যান্য খাবার খাওয়া হয়।

সাপের ডিম কি বিষাক্ত?

এর উত্তর হচ্ছে না! তবে যদি আপনি এটাকে ভালোভাবে রান্না করে না খান তবে এটা আপনার পেটে কিছু সমস্যা করতে পারে যেমনটা হাঁস মুরগির ডিমের ক্ষেত্রেও হতে পারে।

এমনকি বিষাক্ত সাপের ডিমও কিন্তু বিষাক্ত নয়!

যদি আপনি একটা বিষাক্ত সাপের ডিম ভালোভাবে রান্না করে খান তবে সেটা আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি এবং নিউট্রিশন সরবরাহ করবে।

সাপের ডিম দেখতে কেমন?

সাপের ডিম অন্যান্য প্রাণী ডিম থেকে একটু আলাদা দেখতে । অন্যান্য প্রাণীদের (বিশেষ করে পাখির ডিমের মতো)এগুলোতে শক্ত খোলস থাকেনা। এগুলো মোটামুটি বিচ্ছিন্ন ডিম্বাকৃতি আকারের হয়ে থাকে।  কিছু সাপের ডিম দীর্ঘ এবং পাতলা হয়ে থাকে।

তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিমের আকার তা প্রজাতির  উপর নির্ভর করে। সাপের ডিম সাধারণত সাদা থেকে হালকা হলুদ তবে সময়ের সাথে সাথে বাদামী হয়ে থাকে এবং  একটি অন্যটির সাথে  লেগে থাকে যাতে ঝাঁকুনি দিলেও  অনেক সময় ডিমগুলোকে আলাদা করা যায় না।  আপনি যদি একটি সাপের ডিম আলাদা করে হাতে নেন তবে আপনি হাতে squish( থলথলে) অনুভব  করতে পারেন।  পাশাপাশি বেশিরভাগ সাপের ডিম গুলো বেশ ভঙ্গুর জাতীয় হয়।

সাপের ডিম নরম কেন?

আসলে সাপের ডিম নরম হওয়ার কোনো স্পষ্ট কারণ নেই তবে একটা ধারণা আছে যে ডিমের শেলের নম্রতা ডিম এবং ঝিল্লি জুড়ে আদ্রতা স্থানান্তরের কাজ করে। পাশাপাশি ডিমগুলো নরম হওয়ার কারণে সাপটার দেহের মধ্যে আরো বেশি ডিম জায়গা দিতে পারে যাতে করে তার প্রজননের সর্বাধিক আউটপুট পাওয়া যায়।

সাপ কী তাদের ডিমে তা দেয়?

না! বেশিরভাগ সময় সাপের ডিম দেওয়ার পরে পিতা-মাতা ডিমের  কোনো যত্নই নেয় না। সাপের ডিম নরম হয় তাই এর উপর সরাসরি বসে থাকাটা বিপদজনক। তবে হ্যাঁ কিছু সাপ ডিম এর চারপাশে কুণ্ডলী পাকিয়ে বসে থাকে এবং হ্যাচিং এর আগ পর্যন্ত এভাবেই বসে থাকে! আর একে ব্রুডিং বলা হয়।

আসুন এবার জেনে নেই, কোন কোন দেশে  সাপ ও সাপের ডিম  খাদ্য হিসেবে বিখ্যাত :

1। ভিয়েতনাম: ভিয়েতনামে সাপ একটি সাপ সুস্বাদু জনপ্রিয় খাবার। সাপের রক্ত সেখানে মদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং এটিকে সেখানে আফ্রোডিসিয়াক বলা হয়। এছাড়া ভিয়েতনামের সাপের মাংস এবং ডিম খুব জনপ্রিয়।

2। থাইল্যান্ড: থাইল্যান্ডে সাপ তেমন জনপ্রিয় না হলেও rat Snack এবং kobra কে সেখানে খুবই সুস্বাদু বলে মনে করা হয়।

এই ব্লগ পড়তে ভুলবেন না! 

জানার আছে অনেক কিছুঃ ডিডস (DDOS) কি ?

অক্টোপাস: আজব তবুও এক বিস্ময়কর প্রাণী!

3। চীন: সাপের স্যুপ চীনের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। এটি বহু শতাব্দী ধরে জনপ্রিয় কারণ  এর নিরাময়ের বৈশিষ্ট্য। সাপের স্যুপ দেশের শীতল অংশগুলিতে বিশেষত জনপ্রিয় যেখানে এটি “ভিতরে বাইরে” থেকে শরীর গরম করার জন্য খাওয়া হয়। পাইথনস, জল সাপ, কোবরা এবং ক্রেটস সহ বেশ কয়েকটি বিভিন্ন সাপ দিয়ে স্নেক স্যুপ তৈরি করা হয়।

4। জাপান: বিষাক্ত সামুদ্রিক সাপ এখানে খুব জনপ্রিয়। এসব গুলো তাদের ঐতিহ্যবাহী স্যুপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এখানে সাপের ত্বকসহ তৈরি সুপ বেশ জনপ্রিয়  ।

এইতো গেল সাপ এবং সাপের ডিম এর কথা। তো আপনি কি সাপের ডিম খেতে পছন্দ করবেন?

সোর্সঃ https://petigloo.com/are-snake-eggs-edible/
https://wildlifeinformer.com/can-you-eat-snake-eggs/

Exit mobile version