বিজ্ঞান ব্লগ

ক্রিপ্টোকারেন্সি: বিকল্প সার্বজনীন বিনিময় মাধ্যম (প্রথম পর্ব)

আমরা বাংলাদেশে এখন প্লাস্টিক কার্ডের যুগ ছাড়িয়ে ইলেকট্রনিক মানির যুগে পা দিয়েছি। এখন টাকা পাঠাতে আর ব্যাংকে যেতে হয় না। নিজের মোবাইলেই ibanking এর মাধ্যমে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে দেশ বিদেশের যেকোনো ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায় ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবহার করে।

আর বিকাশ, রকেট বা নগদের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এসে তো কাজ আরো সহজ করে দিয়েছে। এভাবেই আমরা দাড়িয়ে আছি ইলেকট্রনিক মানির যুগে, কিন্তু বিশ্ব কিন্তু থেমে নেই। তারা আরো এগিয়ে যাচ্ছে, ইলেকট্রনিক মানিকে ছাপিয়ে নতুন এক ধারণা নিয়ে মাঠে নেমেছে। ধারণাটি অনেক আগে আসলেও ইদানিং কোভিডের সময় গুগল, ফেসবুক, আমাজনের মতো বড় বড় কোম্পানি কাজ শুরু করেছে, আর সাম্প্রতিক সময়ে PayPal এর সিইও ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কথা বলেছেন এবং আগ্রহ দেখিয়েছেন কাজ করতে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি?

ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো ডিজিটাল অর্থ। আমি অর্থ বললেও অনেকেই টা মানতে নারাজ। তাই ক্রিপ্টো কে বলতে হয় ডিজিটাল সম্পদ। পার্থক্য বুঝতে পারছেন না? আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি:

বিভিন্ন দেশের টাকার দর ভিন্ন হয় কেন? কারণ টাকার দর নির্ভর করে ওই দেশের রিজার্ভে প্রতি টাকার জন্য কতটুকু স্বর্ণ আছে তার ওপর। এজন্যেই কোনো দেশের সরকার বেশি টাকা ছাপালে ওই দেশের টাকার অর্থমূল্য কমে যায়। অর্থাৎ কোনো দেশের টাকা কাওকে দেওয়া অর্থ হলো টাকার নামে দেশের রিজার্ভের কিছু স্বর্ণ  দেওয়া। এভাবেই সকল দেশের ভিন্ন ভিন্ন কারেন্সিকে এক করে বিনিময় করা হয়। আর এই ঘটনায় টাকা হলো অর্থ আর স্বর্ণ হলো সম্পদ। আর অর্থের মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে সম্পদের উপর। অর্থাৎ অর্থের বিনিময় যোগ্যতা নির্ভর করে অন্য একটি বিষয়ের ওপর। এটাই হলো অর্থ (টাকা) আর সম্পদের পার্থক্য।

আর এই ক্রিপ্টোকারেন্সি কে সরাসরি সম্পদ বলা হচ্ছে। সুতরাং এটার  বিনিময় যোগ্যতার জন্য অন্য কোনো ভিত্তি ( যেমন:  টাকার ক্ষেত্রে সম্পদ হিসেবে স্বর্ণ) প্রয়োজন নেই। সরাসরি বিনিময় এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সামনে এসেছে এটি।

এগুলো পড়তে ভুলবেন না !!! 

প্রেইরি ডগঃপরিবেশ বন্ধুর কিছু জানা এবং কিছু অজানা

গোল্ডেন রেসিওঃ গণিতের বিস্ময় (প্রথম পর্ব)

ইয়ারওর্য়াম: মস্তিষ্কে যখন সুর এর ঘূর্ণিঝড় !

ক্রিপ্টোকারেন্সি এর বিনিময়:

সাধারণভাবেই বোঝা যাচ্ছে যেহেতু ক্রিপ্টোকারেন্সি কে অন্য কোনো কিছুর ওপর নির্ভর করতে হয় না, তাই এর বিনিময়ের বিষয়টি হবে খুবই সহজ। এখন তাত্ত্বিক কথা বাদ দিয়ে সাধারণ কথা বলি: ক্রিপ্টোকারেন্সি কোনো দেশের নিজের অর্থ নয়, সকল দেশই এটি ব্যবহার করবে। কিভাবে ব্যবহার করবে? ক্রিপ্টো কারেন্সি কে খুব সহজেই অন্য যেকোনো কারেন্সি তে পরিবর্তন করা যায়।

এবং এই পরিবর্তন এর জন্য কোনো ঝামেলাও পোহাতে হয় না। কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সি ধারণায় যে ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হতে চলেছে তাতে আর ক্রিপ্টোকরেন্সিকে অন্য কোনো কারেন্সি তে পরিবর্তন করতে হবে না। সব দেশেই টাকার বদলে ক্রিপ্টোকারেন্সি  ব্যবহার করা যাবে। যেমনটি ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে ইউরো ব্যবহার করা যায় নিজেদের দেশের নিজস্ব টাকার সাথে।

এই ব্লগে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে সাধারণ ধারণা দিলাম। পরবর্তী ব্লগে এ সম্পর্কে ভিন্ন কিছু বিস্তারিত বিষয় এবং সর্বজনীন বিনিময় মাধ্যম হিসেবে কিভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যাবহার হবে তা বলব।

তথ্যসূত্রঃ উইকি , ফোর্বস,

 

Exit mobile version