বিজ্ঞান ব্লগ

টিকটিকি কেন নিজের লেজ খসিয়ে ফেলে??

আমরা লেজ কাটা শিয়ালের গল্প শুনেছি কিন্তু বাস্তবে দেখেনি। কিন্তু লেজকাটা টিকটিকি আমরা প্রায়শই দেখি এবং এদের একটি বৈশিষ্ট্য হয়তো আমরা চাক্ষুষ করেছি। সেটি হচ্ছে লেজ ফেলে পালিয়ে যাওয়া, আবার যখন ওই টিকটিকির দেখা মেলে, তখন কাটা লেজের জায়গায় একটি পুনরায় গজানো ছোট লেজ দেখা যায়।

টিকটিকি লেজ

টিকটিকি লেজ ফেলে পালায় কেন??

টিকটিকির লেজ খসে পড়াটা টিকটিকির আত্মরক্ষার কৌশল। টিকটিকি আক্রান্ত হলে অল্প আঘাতেই বা কখনো নিজে থেকেই লেজ খসিয়ে পালিয়ে যেতে পারে। টিকটিকির লেজ খসে পড়ার পর লেজটি নড়তে থাকে এবং শিকারী চোখ তখন লেজের দিকে চলে যায় এবং এই সুযোগে নিজে পালিয়ে যায়। লেজ রেখে শত্রুকে ধোঁকা দিয়ে পালানোর কৌশলকে Caudal Autotomy বলে।

নিজের জীবনের মায়ায় টিকটিকি তার লেজ হারিয়ে পালায় এই বলে যে,

চাচা আপন প্রাণ বাঁচা। লেজতো পরে গজাতে পারব।

যদি লেজটি খসে পড়ার পর অক্ষত থাকে, তখন টিকটিকি সেটি তার খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে এবং পুষ্টির যোগান দেয়।

অর্থাৎ এক ঢিলে দুই পাখি। এই একটা লেজ দিয়ে আত্মরক্ষা করলো আবার নিজের পেটটাও ভরালো। এবার আসি টিকটিকির লেজ গজায় কীভাবে??

 টিকটিকি যদি তার লেজ না গজায়, তবে সে ধোঁকা দিয়ে পালাবে কীভাবে?? তাই নিজের টিকে থাকার জন্য তাকে লেজ বড় করতে হয়। Autotomy নামক প্রক্রিয়ায় কিছু টিকটিকি লেজ খসিয়ে ফেলার সক্ষমতা অর্জন করে এবং Epimorphosis নামক প্রক্রিয়ায় আবার লেজ গজাতে পারে। Epimorphosis এর মাধ্যমে দেহের নির্দিষ্ট কিছু জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোষবিভাজনের মাধ্যমে পুনরায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।epimorphosis, regeneration এর একটি রূপভেদ।

এই ব্লগ পড়তে ভুলবেন না! 

কি হবে যদি কেউ সাপের ডিম খেয়ে ফেলে??

বিজ্ঞানী ড. শুভ রায়: প্রতিস্থাপনযোগ্য কৃত্রিম কিডনির উদ্ভাবক

Regeneration একটি Postembryonic morphojenesis যা শরীরের হারিয়ে যাওয়া অংশগুলোকে পুনরুদ্ধারের জন্য জীবের নির্দিষ্ট অংশের ক্ষমতাকে চিহ্নিত করে। Regeneration প্রাণীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে দেখা যায়, এটি শরীরের কোষ, টিস্যু, অভ্যন্তরীন অঙ্গ কাঠামো, এমনকি পুরো শরীরের স্তরেও ঘটতে পারে। যেসব প্রক্রিয়ায় Epimorphosis সম্পন্ন হয়

যেই স্থানটি আঘাতপ্রাপ্ত প্রথমে সেখানে epidermis এর আস্তরণ পড়ে। তারপর mesenchyme dedifferentation প্রক্রিয়ায় একটি blastema তে পরিণত হয়ে তৈরি করে apical ectodermal cap এবং পরে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে অঙ্গটি তৈরি হয়। এভাবেই টিকটিকি নিজেদের লেজ গজায়।

অঙ্গটির তৈরি হওয়ার পরও সেটি আর আসল অঙ্গের মতো থাকে না।যেমনটি টিকটিকির বেলায় দেখি, পুনরায় লেজ গজানোর পর লেজটি ছোট এবং মোটা হয়, এছাড়া এটি আগের লেজের মতো দেখতেও হয় না।

Exit mobile version