প্রযুক্তি, এক আশীর্বাদের নাম। দিনকে দিন প্রযুক্তি তার শাখা প্রশাখা বিস্তার করে উন্নত হচ্ছে। ইন্টারনেট তথা সাইবার দুনিয়া প্রযুক্তির সহজলভ্যতাকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করলেও দেখা দিয়েছে বেশকিছু নিরাপত্তাজনিত সমস্যা।
ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেমন ভাল কাজ করা যায় তেমনি এর দ্বারা নানাভাবে ক্ষতিও করা সম্ভব। সাইবার সিকিউরিটি শুধু ইন্টারনেট বা কম্পিউটারের সাথে সম্পর্কিত ব্যাপারটি এমন নয়, আধুনিক সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিজিটাল ইনোভেশন হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে।
সচেতনতাই পারে এই সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। ১০ টি কার্যকর কৌশল অবলম্বন করলে অনেকাংশেই এই গুরুতর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক কৌশলগুলো।
১. ভিন্ন একাউন্ট – ভিন্ন পাসওয়ার্ড
পাসওয়ার্ড সিকিউরিটির সবচেয়ে বড় হুমকি শুধুমাত্র দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাই নয় বরং বিভিন্ন একাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা। অনেকেই আছে যারা বিভিন্ন একাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকেন যা অনেক বড় হুমকির কারণ। আইটি বিশেষজ্ঞরা বলেন, একাউন্টগুলির সুরক্ষার জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত যাতে হ্যাকাররা সবগুলো নিজেদের দখলে নিতে না পারে।
আপনি হয়তো ভাবছেন, এতোগুলো একাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ডের ব্যবহার মনে রাখা বেশ দুরূহ ব্যাপার! এই সমস্যা লাঘব করার জন্য রয়েছে ‘পাসওয়ার্ড ম্যানেজার সফটওয়্যার’ অথবা কাগজে পাসওয়ার্ডগুলি লিখে রাখা।
২. মাল্টি ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখা
সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, ফিনান্সিয়াল একাউন্ট ইত্যাদিতে লগইন করার জন্য ‘অতিরিক্ত ধাপ’ ব্যবস্থা চালু করলে নিরাপত্তা বেশ বৃদ্ধি পায়। মাল্টি ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন পদ্ধতিতে চূড়ান্তভাবে লগইন করার জন্য ৬ ডিজিটের একটি কোড টেক্সটের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়, যার সাহায্যে আপনি লগইন করতে পারবেন। কেউ যদি একাউন্টে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে তাহলে কোড নাম্বারটি আপনার কাছে চলে আসবে, এতে করে আরো সতর্ক হতে পারবেন। এই পদ্ধতি খানিকটা সময় সাপেক্ষ হলেও যথেষ্ট নিরাপত্তা প্রদান করে।
৩. এন্টি ফিশিং
ধরুন, কেউ আপনাকে একটি লিঙ্ক দিল এবং আপনি সেই লিঙ্কে ঢুকে দেখলেন ওয়েবসাইটটি পুরোপুরি ইউটিউবের মত। ইউটিউব ভেবে কিছু না চিন্তা করেই সেখানে আপনার ইমেইল আর পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে গেলেন। আপনি যখনই আপনার ইমেইল আর পাসওয়ার্ড দিবেন সাথে সাথে সেই ইমেইল আর পাসওয়ার্ড যে ওয়েবসাইটটি নির্মাণ করেছে তার কাছে চলে যাবে, এখন সে চাইলেই আপনার অ্যাকাউন্ট নিজের আওতায় নিয়ে নিতে পারে।
এটিই ফিশিং – অর্থাৎ টোপে ধরা পড়া। তাই যত্রতত্র লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকুন।
|
হেক্সাঃ দ্যা আম্যাজিং স্পাইডার রোবট-সম্পর্কে জানতে ক্লিক করো এখানে |
৪. অব্যবহৃত এপস ডিলিট করে ফেলা
অধিকাংশ স্মার্টফোন এপস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ফোনের লোকেশন ও যাবতীয় তথ্য ট্রেস করতে পারে। তারা তথ্যগুলো এডাভার্টাইজিং এবং মার্কেটিং কোম্পানিকে দিয়ে থাকে যা আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ট্র্যাকিং কোম্পানি এপসগুলো থেকে সহজেই আপনার আপনার কর্মকাণ্ড, টেকনিক্যাল ডিটেইলস চিহ্নিত করতে পারে। এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে এপস ইন্সটল করার সময় পারমিশনগুলো সতর্কতার সাথে এনাবল করা এবং অব্যবহৃত এপসগুলো ফোনে না রেখে আনইন্সটল করে দেওয়া যা আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে।
৫. এপসগুলো আপ-টু-ডেট রাখা
হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন, সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তাদের এপসগুলোর আপডেট এনে থাকে। মূলত তারা বিভিন্ন ছোট-বড় বাগ ফিক্স করার পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে থাকে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে হ্যাকাররা এপসগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার জন্য যতটুকু সফল হয়েছিলো ২০১৯ সালে সেটা অনেকাংশে কমে গেছে শুধুমাত্র এপসগুলো হালনাগাদ করার কারণে।
|