বিজ্ঞান ব্লগ

ব্ল্যাকহোলের আদ্যোপান্ত-পর্ব ২

গত পর্বে আমরা ব্ল্যাকহোল কি এইটা সম্পর্কে টুপুস করে একটু জেনেছিলাম। আজকে আমরা এই ছোট্ট বাচ্চাটার জন্ম / জন্ম প্রক্রিয়া সম্পর্কে ঘুপুস করে জেনে নিব।ব্লাকহোল মুলত বেশ কয়েক ধরনের দেখা যায়। তার মদ্ধে একটা টাইপ হচ্ছে ছোট্ট ছোট্ট ব্লাকহোল । টাইপ-২ হচ্ছে একটু বড় মানে মাঝারি আর কি। আরেকটা টাইপের ব্ল্যাকহোল আছে টাইপ-৩ যারা কিনা সুপ্পপ্পপার ডুপ্পপার ম্যাসিভ ব্লাকহোল। ( সুপারম্যাসিভ ব্লাকহোল)
টাইপ-১ঃ বিগ ব্যাংয়ের খুবই অল্প সময় পরই অতি ঘন বস্তু জমে বিশাল ভরের অতি ক্ষুদ্র কিছু ব্ল্যাকহোল তৈরি হয় ( যেটা কিনা অনেকটা পরমানু আকারের মতো )। এরকম অনেক অনেক ব্লাকহোলের সৃষ্টি হয়েছিল। এদের আকার ছোট হলেও ভর প্রায় কয়েকশ কোটি টন।
( Can you feel the mass?!! ). যদিও এগুলো খুব ক্ষণস্থায়ী ছিল। প্রায় সবগুলোই বিস্ফোরনে উড়ে গেছে। তবে হয়তবা কিছু কিছ এখনও এই মহাবিশ্বেরই কোথাও না কোথাও আপন মনের সুখে উড়ে বেড়াচ্ছে।
টাইপ-২ঃ কোনো সুপারনোভা বিস্ফোরনের পর যদি তা নিউট্রন স্টারের ধাপ পার হয়ে যায় তবে সেটি মোটামুটি মাঝারি আকারের একটা ব্লাকহোলে পরিণত হয়।
টাইপ-৩ঃ কোনো গ্যালাক্সি সৃষ্টির শুরুতে তার কেন্দ্রে বিশাল পরিমান পদার্থ একীভূত হয়ে ঘুরপাক খেতে খেতে সুপারম্যাসিভ ব্লাকহোলের সৃষ্টি হয় । আবার দুইটা ব্লাকহোল এক হয়েও এরকম সুপারম্যাসিভ ব্লাকহোল সৃষ্টি হতে পারে।
পর্ব ১ টি পড়তে ঘুরে এসো এখানে
সাধারণত সূর্যের ১০ গুন ভরের কম ভরের তারাগুলো জীবনের শেষ সময়ে শ্বেত বামন (white dwarf) এ পরিণত হয়। যাদের ভর সূর্যের ১০-২৮ গুন তারা নিউট্রন স্টারে পরিনত হয় এবং ২৮+ গুলো ব্ল্যাকহোল এর পর্যায়ে যায়।
“আচ্ছা আমরা তো ব্ল্যাকহোল এর জন্ম জানতে চাচ্ছিলাম তাইনা? তার মদ্ধে আবার শ্বেতবামন তারপর নিউট্রন স্টার এরা আবার কইথেকে এলো? এগুলাই বা কি?” এরকম প্রশ্ন অনেকের মাথায় ঘুরছে হয়ত। কিন্তু এদেরও আবার নিজেদের ফিল্ডে অস্থির রকমের বিস্তার রয়েছে। শ্বেতবামন নিয়ে বলতে গেলে হয়ত আরেকটা পোস্টই লেখা হয়ে যাবে। শ্বেতবামন একসময় কৃষ্ণ-বামনে ( black drwaf ) পরিনত হয় যেখানে কিনা প্রচুর পরিমানে ডায়মন্ড পাওয়া যায়। ( অনেকে আবার কৃষ্ণ-বামন ( black drwaf ) কে Blackhole ভেবে ভুল করতে পারে। কিন্তু না এই দুইটা জিনিস সম্পূর্ণ আলাদা। ) আমাদের সূর্যও কিন্তু একসময় এই শ্বেত-বামনেই পরিণত হবে। তার মানে আমাদের ডায়ামন্ড এর দরকার পরলে আমরা কিন্তু তা সূর্য মামাকে রিকোয়েস্ট করে দেখতেই পারি তাই না। ! সে যাকগে ওইটা নাহয় পরে আলোচনা করা হবে। 
তো আসি নিউট্রন স্টারের কথায়। এদের ব্যাস মাত্র ২০ কিলোমিটারের মতো। আর ভর সূর্যের প্রায় ১ দশমিক ৪ গুণ।
যদি নিউট্রন স্টারের মাত্র এক চা-চামচ পরিমাণ নিয়ে পৃথিবীতে ওজোন করা হয় তবে দেখা যাবে ওটাই হয়ে যাচ্ছে একশ কোটি টন!  সাধারণত নক্ষত্রের মদ্ধে থাকে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস। কোন স্টার যখন নিউট্রন স্টারে পরিণত হয় তখন এর মদ্ধে অস্বাভাবিক রকমের গ্রাভিটি এর চাপ দেখা দেয় আর তখন প্রোটন ও ইলেকট্রন সব নিউট্রনে পরিনত হয় ( তাইতো একে নিউট্রন স্টার বলা হয় )। প্রচ্ন্ড গ্রাভিটির ফলে সেটির বিস্ফোরণের আগেই তার কেন্দ্রে একটি মিনি ব্ল্যাকহোল এর সৃষ্টি হয়। ফলে তা নিজেকেই নিজের মদ্ধে টানতে থাকে, ইন্টেরেস্টিং না ?!!
এখন শুরু হয় খেলা…। এর ফলে তার প্রসারন ঘটতে থাকে আর একসময় বুম্মম্মম্মম( blast )। তখন gamma ray bursts নির্গত হয়। [ Bursts can last from ten milliseconds to several hours and during that it produces 100 times more energy that sun produces during his whole life ]. আর এই রে এর সামনে যে পরবে সে জাস্ট তৎক্ষণাৎ ফুটুস।
আর এইতো এভাবেই একটা সুইট সুইট কিউট কিউট ব্ল্যাকহোল এর জন্ম হয়……।। ইয়েএএএ ব্ল্যাকহোল এর এক্সিকিউসশন হইসে ফাইনালি ।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বৃহৎ মানে সবচেয়ে বড় মানে বিশাল আকৃতির ব্ল্যাকহোলে হচ্ছে S50014+81। যার ভর কিনা সূর্যের ভরের ৪০ বিলিয়ন গুন অথবা আমাদের গ্যল্যাক্সির কেন্দ্রে যেই ব্ল্যাকহোল টি আছে তার ১০,০০০ গুন। এর ব্যাস ২৩৬.৭ বিলিয়ন কিলোমিটার যা কিনা সূর্য হতে প্লুটো এর দূরত্বের ৪৭ গুন।
যাকগে এইটা হচ্ছে একটা সুপারমেসিভ ব্ল্যাকহোল। সুপারমেসিভ ব্ল্যাকহোল এর জন্ম কিন্তু হয় আরেকভাবে। আচ্ছা ওইটা নাহয় পরবর্তী পোস্ট এর অংশ থাকবে। এখন বলতে গেলে আমাকে ধৈর্যশীল পাঠক সমাজের গালিও খেতে হতে পারে। আজকের পর্বটা মনে হয় বেশিই লম্বা হয়ে গেছে। আচ্ছা নেক্সট টা শর্ট করে দেব।
Exit mobile version