বিজ্ঞান ব্লগ

Subject Review- IIT

IT নিয়ে অনার্স শেষ করলে সর্বপ্রথম তোমার পরিচয় হবে “সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার” হিসেবে। IIT পড়তে চাইলে তোমার সর্বপ্রথম যে কোয়ালিটিগুলো না থাকলেই নয়-
১. মুখস্থবিদ্যাকে দূরে ঠেলে দেওয়া
২. প্রোগ্রামিং করার ধৈর্য্য ও ইচ্ছাশক্তি
৩. প্যাশন, সাধনা ও চিন্তাশক্তি
ধরে নাও তোমার একটা রেস্টুরেন্ট আছে। যেখানে সম্পূর্ন অফিসিয়াল কার্যক্রম চলবে রোবটের মাধ্যমে। রোবটই কাস্টমার রিসিভ থেকে শুরু করে বিল নেওয়া, ফুড সাপ্লাই, সবকিছু করে থাকবে। ক্রাইম হলে রোবটই ব্যবস্থা নেবে। তবে তোমার শরণাপন্ন হতে হবে একজন আইটি স্পেশালিস্ট এর।
অথবা ধরো তুমি তোমার রেস্টুরেন্ট এর জন্য একটা স্পেশাল অ্যান্ড্রইড অ্যাপ বানাতে চাও। যেটা দিয়ে কাস্টমার ফুড অর্ডার করতে পারবে, বিল পরিশোধ করতে পারবে, প্রয়োজনে অর্ডার বাতিলও করতে পারবে। তখনও তোমার যেতে হবে একজন সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারের কাছে। বুঝতেই পারছো একজন IT Degree Holder এর কর্মক্ষেত্রের তথা দায়িত্বের কোন শেষ নেই। কেননা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কোম্পানীর জন্ম হচ্ছে। জন্ম হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজনিয়তা।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম IT প্লাটফর্ম চালু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০০১ সালে। (১৯৮৫ সালে গঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “কম্পিউটার সেন্টার” এর নাম পরিবর্তন করে তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টটিউট রাখা হয় ২০০১ সালে)। গর্বের বিষয় IT থেকেই দেশে সর্বপ্রথম সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রি দেওয়া হয় (BSc in Software Engineering – BSSE).
প্রোগ্রামের প্রতি ভালবাসাঃ
IIT তে পড়তে গেলে সবার আগে প্রোগ্রামিং-কে ভালবাসতে হবে। একজন প্রোগ্রামার যেভাবে বলবে কম্পিউটার সেভাবেই কাজ করতে বাধ্য। কেবল মাত্র চার দেয়ালের মাঝে বসে আউটসোর্সিং করে বড়লোক হওয়াই তোমার উদ্দেশ্য থাকবেনা। তোমার চিন্তা থাকবে তুমি প্রোগ্রামিং শিখতে চাও কারন বাংলাদেশ যখন চাঁদে রকেট পাঠাবে তার নিয়ন্ত্রণকারী কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম লিখবে তুমি। তুমি চাও কোটিকোটি টাকা মূল্যে বিদেশ থেকে আনা জীবন রক্ষাকারী মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট কম খরচে দেশে বসেই তৈরি করতে। তুমি এমন একজন এক্সপার্ট হতে চাও যে বিভিন্ন কল কারখানা অটোমেটেড করে ফেলতে পারে। অথবা তুমি চাও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা করতে… (এই তালিকা অনেক বড় হতে পারে)
তবে কখনই মোটিভেটেড হয়ে এ সাবজেক্টটি বেছে নেওয়া যাবে না। কেননা কেউ মোটিভেটেড হয়ে CSE শুরু করতে পারে ঠিকই, ১ম-২য় বর্ষ শো অফেই কেটে যায় কিন্তু পরবর্তিতে রাত-দিন প্রোগ্রামিং করে কাটিয়ে দিতে পারে না। এই জন্য দরকার প্যাশন।
সিএসই সাবজেক্ট রিভিউটি পড়তে ক্লিক করো
প্রোগ্রামিং কন্টেস্টঃ
IT সাবজেক্ট এর একটা প্লাস পয়েন্ট হলো এ সাবজেক্টে একাডেমিক সিলেবাসের এর প্রাক্টিস সারা বছর ধরেই চলতে থাকে। পড়া ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই। কেননা সারা বছরই কোন না কোন কনটেস্ট লেগেই থাকে। যেমন ACM-ICPC contest (https://www.facebook.com/ICPCNews), DUITS, IUT national contest , BUET CSE week etc. এভাবে হাজারটা স্টুডেন্টের মাঝে নিজেকে যাচাই করার সুযোগ অন্যান্য সাবজেক্টে হয় না।
কোডিং vs গেমিংঃ
অনেকে মনে করে থাকে “আমার তুখোর লেভেলের গেমের দক্ষতা আছে, আমি নিশ্চই IT নিয়ে পড়তে পারব” তবে ধারনাটি সম্পূর্ন সঠিক নয়। কেননা গেম খেলার প্রতি আসক্তি অনেকেরই থাকে। কিন্তু তোমার যদি গেম খেলার চেয়ে গেম ডেভলপিং, ফেসবুক ব্রাউজিং এর চেয়ে ফেসবুক ডেভলপিং নিয়ে, অ্যান্ড্রয়েড ডেওভলপিং নিয়ে ঘাটাঘাটি করার আসক্তি থাকে তবে নিঃসন্দেহে IT সাবজেক্ট তোমার জন্য।
First Priority is Creativity
মুখস্ত বিদ্যা নিয়ে এই সাবজেক্ট এ খুব বেশি দূর যাওয়া যায়না । স্টেপ স্টেপ এ logic and innovation অ্যাপ্লাই করতে হবে । কারো যদি গণিত কিংবা পদার্থবিজ্ঞান ভালো লাগে তার জন্য আইটিতে ভালো করা সহজ হয়ে যায়। তোমার রেজাল্ট যদি খারাপও থাকে কিন্তু তুমি যদি Creative and Passionate হও তোমাকে কেউ আটকাতে পারবেনা , এটা যেকোনো আইটি স্টুডেন্ট এর কাছ থেকে গ্যারান্টি পেতে পারো।
নতুন নতুন আইডিয়া মাথার মধ্যে সবসময় ঘুরপাক খাওয়াতে হবে । বের করে নিয়ে আসতে হবে বেস্ট এর মধ্যে বেস্ট আইডিয়া টা । একটা আইডিয়া তোমার লাইফ এর জন্য মাইলফলক হয়ে থাকতে পারে । Microsoft Imagine Cup, Banglalink Grandmaster, Robi Challenge এরকম কিছু আইডিয়া Seeking Campaign এ অংশগ্রহন করতে পারো।
Different Co Curricular Activities:
IT তে পড়ে তুমি বিভিন্ন Co-curricular Activities অংশ নিতে পারো । তুমি Microsoft Student Partner হয়ে Microsoft Bangladesh এর নানা কার্যক্রমে তুমি অংশগ্রহন করতে পারবে । BASIS সফটওয়্যার মেলায় Volunteer হতে পারবে । বিভিন্ন International journal এ তোমার Research paper পাঠাতে পারবে । ওগুলো Accepted হলে ওরা তোমাকে তাদের দেশে আমন্ত্রন জানাবে । Google Apps এ তোমার বানানো Apps Store করতে পারো ।
দক্ষতা যাচাই এর সুবর্ণ সুযোগঃ
IIT এর বিশেষত্ব হচ্ছে IT তে তোমাকে নরমাল Course গুলোর সাথে আলাদা কিছু Specialized Course করতে হবে যেখানে সফটওয়্যার প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করতে হবে, সিম্পল সফটওয়্যার বানাতে হবে। IIT এর আর একটি বিশেষ দিক (যেটা CSE এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য) হচ্ছে তোমাকে ৬ মাস Industry তে জব (Interne) করতে হবে ( with salary ). এটা Course এর অংশ। কিছু ভাইয়ারা ওখানেই Join করে ফেলেন, ফলে ৪র্থ বর্ষ এর ক্লাস করতে আসতে চাননা। তাদের স্যাররা জোর করে ধরে নিয়ে আসেন।
কোথায় কোথায় এ কোর্স করানো হয়?
বাংলাদেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কোর্সটি করানো হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে নামের ভ্যারিয়েশন থাকে। কোর্স সিলেবাস ও ধরন মোটামুটি একই।
লিস্ট দেওয়া হলো-
Dhaka University (IIT)
Jahangirnagar University (IIT)
Noakhali Science and Technology University (IIT)
Sahajalal University of Science & Technology (ICT)
BUET (IICT)
KUET (IICT)
CU (ICT)
Daffodil International University (DIIT)
Pabna University of Science and Technology (ICE)
Mawlana Bhashani Science and Technology University (ICT)
এখানে,
ICT = Information and Communication Technology
ICE = Information and communication Engineering
IICT = Institute of Information and Communication Technology
DIIT = Daffodil Institute of IT
সর্বোপরি যে সাবজেক্ট নিয়েই পড়ো না কেন, প্যাশন নিয়ে এগুবে। মনে রাখবে যেখানে তোমার প্যাশন আছে, বাংলাদেশে তার মূল্য না থাকলেও তুমি সেটা দিয়েই আকাশ ছুতে পারবে।তোমরা কে কোন সাবজেক্ট এর রিভিউ চাও অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাও।
যুক্ত হও আমাদের সাথে Science Bee Family
 
Exit mobile version