বিজ্ঞান ব্লগ

মহাবিশ্ব ও পৃথিবী

পৃথিবী রহস্যময়। এর থেকে রহস্যময় অধ্যায় রয়েছে মহাবিশ্বের। বিজ্ঞানীদের মতে,এই মহাবিশ্বের মোট ৭-৮ শতাংশ আমাদের চোখে দৃশ্যমান।তাহলে তুমি ভাবতে পারছো কি ৯২-৯৩ শতাংশ আমাদের চোখের আড়ালে!
মানুষ অজানাকে জানতে চায় ।এই রহস্যময় মহাবিশ্বকে জানার জন্য কৌতুহল এখন থেকে নয়। প্রাচীন যুগ থেকে মানুষ এই মহাবিশ্বকে জানার জন্য নানাবিদ কৌশল অবলম্বন বা গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে।
চলো তাহলে একটু জানার চেষ্টা করি মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য-
আজ থেকে ১৫০০-২০০০ কোটি বছর আগে মহাবিশ্বের আকৃতি ছিল ডিম্বাকার । এর ভর ছিল ১০ টু পাওয়ার ৫১ কেজি এবং ঘনত্ব ১০ টু পাওয়ার কেজি /মিটার কিউব।অভ্যন্তরীন বিপুল তাপ ও চাপের কারণে প্রচন্ড শব্দে ডিম্বাকার বস্তুর মহাবিস্ফোরণ ঘটে।এই বিস্ফোরণের ফলেই সৃষ্টি হয়েছিল এই মহাবিশ্ব।এটাকে বিগ ব্যাং তত্ব বলা হয়।
তাহলে এই মহাবিশ্বের বয়স কত?
হাবল এর প্রথম পর্যবেক্ষণের সময়ের তুলনায় বর্তমান জ্যোতিবিজ্ঞানিগণ এখন তাদের টেলিস্কোপের দৃষ্টি অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তার প্রসার করেন।
ফলে এসব দূরতম অবস্থার গ্যালাক্সির যাত্রার শুরুর সময় হিসাব করে মহাবিশ্বের বয়স তারা অনুমান করেছেন দেড় হাজার কোটি বছর।
মহাবিশ্ব কি স্থির?
মহাবিস্ফোরণের পর থেকে যত দিন যাচ্ছে মহাবিশ্বের প্রসারণ একইভাবে বাড়ছে । তবে এই প্রসারণ নিকটবর্তী গ্যালাক্সরি জন্য প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ আমাদের সৌরজগৎ স্ফীত নয় কিংবা গ্রহদের থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বাড়ছে না।
কি কি উপাদান নিয়ে এই মহাবিশ্ব সজ্জিত?
আমাদের আবাস ভূমি পৃথিবীর চারদিকে ঘিরে রয়েছে অসীম আকাশ।আদি অন্তহীন এই আকাশকে বলা হয় মহাকাশ বা নভোমন্ডল। মহাকাশে অসংখ্য জ্বলন্ত গ্যাসপিণ্ড অবস্থান করছে, যেমন -চন্দ্র ,সূর্য, গ্রহ ,নক্ষত্র , ধূমকেতু উল্কা ছাড়াও অনুজ্জ্বল নীহারিকা, পালসার ইত্যাদি।
এই মহাবিশ্বের মৌলিক উপাদান তিনটি।
১.সৌরজহৎ ২.নক্ষত্রপুঞ্জ ৩.গ্যালাক্সি।
বাংলাদেশের প্রথম ক্ষুদ্রাকৃতির কৃত্রিম উপগ্রহ-ক্লিক করো
সৌরজগৎ:সৌরজগতে রয়েছে সূর্য,গ্রহ,উপগ্রহ,ধূমকেতু,উল্কা,গ্রহানুসহ গ্যাস ও ধূলিকনা। সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্র।অর্থাৎ সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহ এবং গ্রহকে কেন্দ্র করে উপগ্রহ ঘূর্ণায়মান।আর অনিয়মিত আকারে রয়েছে উল্কা,ধূমকতেু ,গ্রহাণু,গ্যাস ও ধূলিকণাসহ কঠিন বস্তু।
নক্ষত্রপুঞ্জ: পৃথিবী থেকে দেখলে মনে হয় নক্ষত্রগুলো যেন সমতলে অবস্থান করছে।পৃথিবী থেকে এদের দূরত্ব অনেক বেশি বলে এমনটি মনে হয়।
সূর্য পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র।মূলত তারাগুলোর সমষ্টিই হচ্ছে নক্ষত্রপুঞ্জ।এরকম কয়েক বিলিয়ন তারা রয়েছে। রাতের আকাশে তাকালেই অসংখ্য তারা দেখতে পাই।আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি যে ,সূর্য থেকে অন্যান্য তারাগুলো যদি অনেকগুণে বড় হয় তবে মহাবিশ্ব কত বড়!
গ্যালাক্সি: এতক্ষণ যতগুলো গ্রহ- নক্ষত্র নিয়ে আলোচনা করলাম এদের সমষ্টি হচ্ছে গ্যালাক্সি।তুমি কি কল্পনা করতে পারছো মহাবিশ্ব কত বিশাল থেকে বিশালময়!জ্যোতির্বিদরা মনে করছেন দৃশ্যমান মহাবিশ্বে প্রায় ১০০ বিলিয়ন গ্যালাক্সি আছ। এই গ্যালাক্সিরা খুব ছোট হতে পারে,যেমন মাত্র ১০ মিলিয়ন তারা সম্বলিত বামন গ্যালাক্সি এবং খুব বড় হতে পারে , যেমন দৈত্যাকার গ্যালাক্সিগুলোতে ১০০ বিলিয়ন তারা থাকতে পারে। দৃশ্যমান মহাবিশ্বে আনুমানিক ৩*১০ টু পাওয়ার ২৩ টি মতো তারা থাকতে পারে।
*আশ্চর্য হলেও সত্য এই যে, এই বিশাল মহাবিশ্বের কাছে পৃথিবীর আকৃতি শুধুমাত্র একটি বিন্দুর ন্যায়।এই হল দৃশ্যমান জগৎ।অন্যদিকে অদৃশ্যমান জগতের ৯২-৯৩ শতাংশ অজানাই রয়ে গেল।
Exit mobile version