চিনি শব্দটি শুনলেই মাথায় আসে মিষ্টির কথা। আমাদের রসনা নিবারনের জন্য যেসব খাদ্য প্রস্তুত করা হয় তার অধিকাশই যে চিনি দ্বারা সমৃদ্ধ তা সবারই জানা ! চিনি এমনি এমনি খাওয়া যায়। এমনি এমনি খেতেও মজা। তবে চিনির বিষয়ে কতটুকুই বা জানা আছে? কেনই বা এর স্বাদ মিষ্টি? এর কোনটাও কি জানি? না জানলে জানিয়ে দিচ্ছি।
চিনি আসে ইক্ষু বা আখ থেকে। খৃষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর আগে মধুকেই মানুষ মিষ্টি একমাত্র অবলম্বন মনে করতো। এই ধারণা ছিলো এশিয়ার বাইরে। তবে এশিয়া মহাদেশের মানুষেরা আগে থেকেই চিনির সাথে পরিচিত ছিলো। আখের রস কে গুড় বা চিনি হিসেবে তারা ব্যবহার করতো।
পূর্বে ভারতে চিনি পরিচিত ছিলো র-সুগার, ব্রাউন সুগার প্রভৃতি হিসেবে। কিন্তু এই সুগার নামটি কিভাবে এলো? ভাষাবিদদের মতে “শর্করা” থেকে আরবিতে “শক্কর” আর তা বিবর্তিত হয়ে হয়েছে সুগার। আবার অনেকেই বলে চীন থেকে সাদা চিনি এসেছে বলে এর নাম চিনি। আখের রস থেকে ক্রিস্টাল পরিশোধন করে সাদা চিনিতে রুপান্তরের পদ্ধতি চীন থেকেই এসেছে। তাই এর নাম চিনি। শুরুতে চিনির ব্যাবহার এশিয়াতেই ছিলো। পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল গুলোতে।
তো… চিনির স্বাদ মিষ্টি কেন? আসলে চিনি না। মিষ্টি বস্তুর স্বাদই মিষ্টি! যেমনঃ মধু। তো, এর স্বাদ মিষ্টি কেন? উত্তর হচ্ছে আমাদের জিভের স্বাদ গ্রাহক কোষ। এই কোষ গুলো চার রকমের হয়ে থাকে। অগ্রভাগে থাকে মিষ্টতা সংবেদী কোষ, দুপাশে থাকে লবনাক্ত ও অম্লস্বাদ সংবেদী আর নিচে থাকে তিক্ত স্বাদ সংবেদী কোষ। চিনি মুখে দিলে জিভের পানির জন্য চিনি, গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজে পরিনত হয়। ফ্রুক্টোজ এর মিষ্টতা চিনির চেয়ে বেশি, প্রায় ৭৩ গুণ। আর এই দ্রবণ মুখে গেলে জিভের অগ্রভাগের মিষ্টি সংবেদনশীল কোষ মিষ্টি স্বাদ গ্রহণ করে। আর বাকি গুলা নিরপেক্ষ থাকে। ফলে মিষ্টি স্বাদ লাগে। আর এর জন্যই আমরা মিষ্টি স্বাদ অনুভব করি।