বিজ্ঞান ব্লগ
No Result
View All Result
অক্টোবর ৩, ২০২৩
  • বিজ্ঞান সংবাদ
  • প্রশ্নোত্তর
  • নিয়মাবলি
  • আমাদের লেখা
    • ফলিত বিজ্ঞান
    • সায়েন্স ফিকশন
    • স্কিল ডেভেলপমেন্ট
    • টেকনোলোজি
      • ইন্টারনেট
      • এপ্লিকেশন
      • রোবটিক্স
      • ইলেক্ট্রোনিক্স
      • সাই-ফাই মুভি
    • সৃষ্টিতত্ত্ব
    • এডভেঞ্চার
    • সাবজেক্ট রিভিউ
    • অনুপ্রেরণা
    • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • অ্যারোস্পেস
হোম
বিজ্ঞান ব্লগ
  • বিজ্ঞান সংবাদ
  • প্রশ্নোত্তর
  • নিয়মাবলি
  • আমাদের লেখা
    • ফলিত বিজ্ঞান
    • সায়েন্স ফিকশন
    • স্কিল ডেভেলপমেন্ট
    • টেকনোলোজি
      • ইন্টারনেট
      • এপ্লিকেশন
      • রোবটিক্স
      • ইলেক্ট্রোনিক্স
      • সাই-ফাই মুভি
    • সৃষ্টিতত্ত্ব
    • এডভেঞ্চার
    • সাবজেক্ট রিভিউ
    • অনুপ্রেরণা
    • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • অ্যারোস্পেস
No Result
View All Result
বিজ্ঞান ব্লগ
No Result
View All Result
Home অনুপ্রেরণা

পাস্তুরঃ আধুনিক রোগপ্রতিরোধবিদ্যার জনক যে বিজ্ঞানী

Dipto Barua by Dipto Barua
31 December 2020
in অনুপ্রেরণা, বিজ্ঞানী
পাস্তুরঃ আধুনিক রোগপ্রতিরোধবিদ্যার জনক যে বিজ্ঞানী

লুই পাস্তুর। নামটি শুনলেই বিজ্ঞানপ্রেমীদের মনে আসে ‘পাস্তুরাইজেশন’ বা গাঁজন প্রণালীর কথা। ১৮২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর, ফ্রান্সের জুরা প্রদেশে দোল শহরে জন্মগ্রহণ করেন এই প্রখ্যাত রসায়ন ও অণুজীববিদ। বাবা জোসেফ পাস্তুর প্রথম জীবনে ছিলেন নেপোলিয়নের সৈন্যবাহিনীর সেনাধ্যক্ষ, পরে নিজ গ্রামে ফিরে এসে ট্যানারির কাজে যুক্ত হন। লুই পাস্তুরের বাবা জোসেফ কখনও চাননি যে, ছেলেও তার মতো ট্যানারি শিল্পে কাজ করবে, তিনি চেয়েছিলেন তার ছেলে যেনো উচ্চশিক্ষিত হয়।

সেই অভিপ্রায়ে জোসেফ পুত্র কে পাঠালেন প্যারিসের স্বনামধন্য এক স্কুলে। তবে গ্রামের মুক্ত প্রকৃতির পরিবেশে বেড়ে ওঠা লুই প্রথম দিকে শহরের পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন নি। মাঝে মধ্যেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এই সময় বাবা-কে লেখা এক চিঠিতে পাস্তুর লিখেছিলেন,

যদি আবার বুক ভরে চামড়ার গন্ধ নিতে পারতাম, তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই আমি আবার সুস্থ হয়ে উঠতাম 

কিন্তু আস্তে আস্তে করে তিনি শহরের পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেন। তার পড়ালেখার প্রতি গভীর অধ্যাবসায় ও মনোযোগ দেখে শিক্ষকেরা তার প্রতি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে, লুই পাস্তুর একজন কৃতী শিক্ষক হবেন। লুই পাস্তুরের শিক্ষক-দের সেই মন্তব্য পরে সত্যি-তে রূপান্তরিত হয়েছিলো। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে লুই ভর্তি হন রয়েল কলেজে। মাত্র আঠারো বছর বয়সে লুই তার স্নাতক শেষ করেন। এই সময়টায় তিনি নিজ কলেজেই শিক্ষকতা শুরু করে দেন এবং অপরদিকে বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি নেয়ার জন্য পড়ালেখাও চালিয়ে যান। কুড়ি বছর বয়সে তার ডিগ্রি সম্পন্ন হয়।

বিজ্ঞানের শাখার মধ্যে লুই পাস্তুরের সবচেয়ে পছন্দের বিষয় ছিলো রসায়ন। যখন তিনি রসায়নের ওপর উচ্চতর শিক্ষা লাভের জন্য পড়াশোনা করছিলেন, ঠিক তখনই তিনি আমন্ত্রণ পান স্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিষয়ের অধ্যাপক পদ গ্রহণের জন্য। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর পদে নিযুক্ত ছিলেন মঁসিয়ে লরেস্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন অধ্যাপক হিসেবে লুই পাস্তুরের নিয়মিত যাতায়াত ছিলো মঁসিয়ে লরেস্টের বাসায়।

সেখান থেকেই প্রেমের সূত্রপাত হয় লুই এবং মঁসিয়ে লরেস্টের ছোট মেয়ে মেরির মধ্যে। কয়েক সপ্তাহ প্রেমের পড়েই কালক্ষেপণ না করে মঁসিয়ে লরেস্টের কাছে তার ছোট মেয়ে মেরির সাথে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান লুই। পাস্তুরের প্রতিভার কথা মঁসিয়ে লরেস্টের অগোচরে ছিলো না, তাই সানন্দে প্রস্তাব মেনে নেন তিনি। কিন্তু বিজ্ঞান তপস্বী লুই তার বিয়ের দিন গবেষণায় এতোই মগ্ন ছিলেন যে, আজকে যে তার বিয়ের দিন, একথাই তিনি ভুলতে বসেছিলেন প্রায়! ল্যাবরেটরি থেকে একপ্রকার জোর করেই বিয়ের জন্য চার্চে নিয়ে আসতে হয়েছিলো লুই-কে।

মেরি লুই-এর শুধু স্ত্রী-ই ছিলেন না, ছিলেন তার যোগ্য সহচরী। স্বামীর বিজ্ঞান সাধনায় তিনি নিজেকেও উজাড় করে দিয়েছিলেন। তিনি তার স্বামীর কাজে সাহায্য করতেন সবসময়। একবার ফ্রান্সের যুবরাজ এসেছিলেন স্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক তাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে উৎসবে হাজির হলেও, গবেষণার কাজে যেতে পারেন নি লুই পাস্তুর, কিন্তু স্ত্রী মেরি একবারও অনুযোগ-অভিযোগ করেন নি। তিনি লুই-কে ভালোবেসে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। ১৮৫৪ সালে মাত্র বত্রিশ বছর বয়সে লুই পাস্তুরকে লিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের ডীন এবং প্রধান অধ্যাপক পদে নিযুক্ত করা হয়।

সেসময় ফ্রান্স সরকারের সবচাইতে বেশি রাজস্ব আসতো মদ থেকে। লিলের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে মদের অনেক কারখানা ছিলো। সেসময় কারখানায় প্রস্তুত মদের বিরাট একটি অংশ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। তাই কারখানা মালিক থেকে শুরু করে ফ্রান্স সরকারের বিরাট বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছিলো। এর কারণ অনুসন্ধানের ভার পরে লুই পাস্তুরের ওপর।

তিনি এক মদের কারখানায় গিয়ে দেখলেন সেখানে বড় চৌবাচ্চায় মদ ঢালা হতো, একদিকে থাকতো ভালো মদ, অন্যদিকে থাকতো খারাপ মদ। দুই মদের নমুনা এনে পরীক্ষা করলেন লুই। দীর্ঘ পরীক্ষার পর তিনি লক্ষ্য করলেন যে, ভালো মদের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র গোলাকৃতির এক ধরণের পদার্থ রয়েছে যাকে বলে Globules of Yeast nearly spherical. এবং খারাপ মদের মধ্যে ক্ষুদ্র একটি পদার্থ রয়েছে যেটা লম্বাকৃতির Elongated Globules of Yeast। পাস্তুর তখন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, কোনো ধরণের পারিপার্শ্বিক প্রভাবে হয়তো গোলাকৃতির পদার্থটি লম্বাকৃতির পদার্থে পরিণত হচ্ছে যার দরুণ ভালো মদে গ্যাঁজ সৃষ্টি হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এরপর শুরু হয় দীর্ঘ দশ বছরের কঠোর গবেষণা, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, বাতাসের মধ্যকার অদৃশ্য জীবাণুর কারণেই ভালো মদে গ্যাঁজ সৃষ্টি হয়ে ভালো মদ পচে যাচ্ছে। এতো দিন জীবাণু সম্পর্কে মানুষের ধারণা ছিলো যে, এগুলো আপনাআপনি অথবা অজৈব পদার্থ থেকে জন্ম নেয়। এই ধারণা ভেঙে পাস্তুর জন্ম দেন নতুন এক ধারণার।

পাস্তুর শুধুমাত্র রহস্য উদঘাটন করেই তৃপ্ত হন নি। তিনি চিন্তা করলেন কি উপায়ে মদের গুণগত মানের কোনো প্রকার তারতম্য না করেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করা যায়। তিনি মদকে বিভিন্ন উত্তাপে পরীক্ষা করে লক্ষ্য করেন যে পঞ্চাশ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা একশত একত্রিশ ডিগ্রি ফারেনহাইটে মদের কোনো পরিবর্তন হয়না তবে জীবাণু ধ্বংস হয়। তার এই আবিষ্কার বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে পাস্তুরাইজেশন নামে পরিচিত। শুধুমাত্র মদ নয়, নানা ধরণের খাবার পানীয় যেমন দুধ, বেভারেজ, ক্রিম ইত্যাদি এই পদ্ধতিতে আজও সংরক্ষণ করা হয়। এই যুগান্তকারী আবিষ্কার-কে চিকিৎসাবিজ্ঞানে কাজে লাগান লর্ড লিস্টার। আগে শরীরে যে কোনো ক্ষত খুব সহজেই দূষিত হয়ে যেতো। তিনি এমন প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করেন যাতে বাতাসের ভেসে থাকা ব্যাকটেরিয়া সহজে ক্ষতস্থানে প্রবেশ করতে না পারে।

ফ্রান্সের আরেকটি অন্যতম শিল্প ছিল রেশম শিল্প। এখানেও লুই পাস্তুর তার অবদান রেখেছিলেন বিশেষভাবে। কোনো এক অজানা রোগে হাজার হাজার গুটিপোকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা অনেক অনুসন্ধান করার পরেও সে রোগের কারণ ও প্রতিকার বের করতে সক্ষম হচ্ছিলেন না। উপায় না দেখে ফ্রান্স সরকার এই দায়িত্ব তুলে দেন লুই পাস্তুরের ওপর। প্রতিদিন আঠারো ঘন্টা করে কাজ করতেন লুই। টানা কাজের ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবুও মানসিক শক্তির সাহায্যে বিছানায় শুয়ে শুয়েই চিন্তা করতেন গুটিপোকা নিয়ে। উন্নত জাত উৎপাদন, আরও বেশি রেশম উৎপাদন ইত্যাদি ঘুরতো তার মাথায়। এসময়ে তার অসুস্থতা দেখে ডাক্তারেরা তার জীবনের আশা ত্যাগ করেছিলেন।

এভাবে শুয়ে শুয়েই দীর্ঘ তিন বছরের গবেষণায় লুই আবিষ্কার করেন গুটিপোকার প্রধান দুইটি অসুখ ও এর প্রতিকার। লুই গুটিপোকা চাষী-দের বলেন খারাপ গুটিপোকা গুলো বেছে বেছে সরিয়ে ফেলতে, কারণ খারাপ গুটিপোকার ডিমও দুর্বল ও অসুস্থ গুটিপোকার জন্ম দেয়। সে বছর দেশে রেশমের উৎপাদন হয় অভূতপূর্ব রকমে। লুই এই কাজের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে ফেললেও তার পারিশ্রমিক ছিলো খুবই কম। তখন তৃতীয় নেপোলিয়ন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “এতো কম পারিশ্রমিকেও এতো বেশি কাজ কেনো করেন?” লুই পাস্তুর উত্তর দিয়েছিলেন, “একজন বিজ্ঞানী কখনও ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার জন্য কাজ করে না।“ লুই পাস্তুরের জীবনের লক্ষ্যই ছিলো মানব কল্যাণ।

লুই ছিলেন অগাধ দেশপ্রেমিক। জার্মান বাহিনী যখন ফ্রান্স আক্রমণ করে তখন তিনি ফ্রান্সের সৈন্যদলে যোগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু তার গুরুতর অসুস্থতার কারণে সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। এজন্যে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন,

“ আমি সমস্ত জীবন ধরেই বিশ্বাস করেছি একমাত্র বিজ্ঞান আর শান্তির চেতনাই পারে সমস্ত অজ্ঞানতা আর যুদ্ধের বিভীষিকাকে দূর করতে। বিশ্বাস রাখুন এক দিন সমস্ত দেশই সম্মিলিত হবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং শান্তি ও সহযোগিতার পক্ষে। আর সেই ভবিষ্যত বর্বরদের জন্য নয়, হবে শান্তিপ্রিয় মানবজাতির “

জার্মান বাহিনীর আগ্রাসন কিছুতেই মেনে নিতে পারেন নি লুই পাস্তুর। জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  তাকে সম্মানিক ‘ডক্টর অফ মেডিসিন’ উপাধি দেয়া হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে ফিরতি চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ-কে লেখেন, “ আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে উপাধি দেওয়া হয়েছে তা আমি গ্রহণ করতে অক্ষম, কারণ আপনাদের সম্রাট শুধুমাত্র পৈশাচিক উদ্দেশ্যে দুইটি মহাযুদ্ধ সংগঠিত করেছে। “

১৮৬৭ সাল, পাস্তুর তখন মোটামুটি সুস্থ। সরবন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে রসায়নের প্রধান অধ্যাপক পদে নিযুক্ত করা হয়। এখানে এসে লুই শুরু করলেন জীবাণু তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা। এবার দুই বছর চললো তার এ গবেষণা। সেসময়টায় ফ্রান্সে মুরগির মধ্যে কলেরার ব্যাপক প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। পোল্ট্রি ব্যবসার ওপর বিরাট আঘাত নেমে আসে। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর লুই আবিষ্কার করলেন এক জীবাণুর, এই জীবাণুই ভয়াবহ Anthrax রোগের কারণ।

এটি মাঝে মাঝে মহামারী আকার ধারণ করে গবাদী পশু-পাখি, শুকর, ভেড়ার মধ্যে ছড়িয়ে পড়তো এবং অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটাতো। লুই কেবল অ্যানথ্রোক্স রোগের কারণই কারণই খুঁজে বের করেন নি, এর প্রতিষেধকও আবিষ্কার করেন, যার ফলে ফ্রান্স একটি বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে রক্ষা পায়। ধারণা করা হয় যে, জার্মানির সাথে যুদ্ধে ফ্রান্সের ততোটা ক্ষতি হয়নি যতোটা এ আবিষ্কারের ফলে সরকারের লাভ হয়েছে।

এগুলো পড়তে ভুলবেন না !!

ফিরে দেখা বৈরুত বিস্ফোরণ: অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের রসায়ন

সময় সম্প্রসারণ:ভবিষ্যৎ পৃথিবী ভ্রমণের মাধ্যম।

ফটোগ্রাফি সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক খুঁটিনাটিঃ সুন্দর ছবির ভেতরের কথা

এতদূর আসার পড়েও তখনও তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ কাজটি বাকি ছিলো। হাইড্রোফোবিয়া বা জলাতঙ্ক ছিলো সে সময়ের একটি মারাত্নক ব্যাধি। যখন কোনো মানুষকে পাগল কুকুর কামড়াতো, সেই ক্ষতস্থান সাথে সাথেই বিষাক্ত হয়ে যেতো। ক্ষত কয়েকদিনে শুকিয়ে গেলেও লক্ষণ প্রকাশ পেতো কয়েক সপ্তাহ পরেই। এভাবে করেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে আসন্ন হতো রোগী।

হাইড্রোফোবিয়া নিয়ে কাজ শুরু করলেন লুই। নিজের গবেষণাগারে কুকুর পুষতে শুরু করলেন পাস্তুর। সংগ্রহ করলেন কুকুরের বিষাক্ত লালা। এবং সেই লালা থেকেই প্রস্তুত করেন জলাতঙ্কের সিরাম। খরগোশ ও অন্যান্য জীবের উপরে প্রয়োগ করেই আশ্চর্য ফল পেলেন পাস্তুর। কিন্তু ভয়ে মানুষের দেহে পরীক্ষা চালাতে পারলেন না লুই। কারণ তিনি জানতেন না কতো পরিমাণে মানব দেহে এটি প্রয়োগ করতে হবে। সামান্য পরিমাণের তারতম্য রোগীর জীবন বিপন্ন করতে পারে ভেবে তিনি এই পরীক্ষা মানবদেহে চালাননি।

অবশেষে অনেকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই সুযোগ পেলেন লুই। একটা ছোট ছেলেকে কুকুর কামড়েছিলো। ছেলের মা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে, ডাক্তার তাদের লুই-এর কাছে পাঠিয়ে দেন। লুই পাস্তুর ছেলেটিকে পরীক্ষা করে বুঝলেন যে, ছেলেটির অল্প কয়দিনের মধ্যে মৃত্যু অনিবার্য। রোগের বীজ পুরো শরীরে ছড়িয়ে গেছে। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন নিজের আবিষ্কৃত সিরাম তার উপরেই প্রয়োগ করবেন।

নয় দিন ধরে বিভিন্ন মাত্রায় ঔষধ প্রয়োগ শুরু করেন লুই। একটু একটু করে সুস্থ হতে শুরু করে ছেলেটি, তারপর তিন সপ্তাহে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে সে। চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লো পাস্তুরের এই আবিষ্কার। এক ভয়াবহ মহামারী থেকে রক্ষা পায় পুরো পৃথিবীর মানুষ। লুই পাস্তুরকে অভিনন্দন জানানোর জন্য দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীরা প্যারিসে চলে আসেন। ফরাসি একাডেমির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় তাকে।

এতোকিছুর পরেও তিনি ব্যক্তিজীবনে ছিলেন নিরহংকারী এবং সাধাসিধে। সারাজীবন কাজ করে গেছেন মানব কল্যাণে। কর্মক্ষমতা হারানোর পরে বাইবেল পরে ও উপাসনা করেই শেষ জীবন অতিবাহিত হয় তার। অবশেষে ১৮৯৫ সালের সাতাশে সেপ্টেম্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত হন মহান এ বিজ্ঞানী। যাকে তৃতীয় নেপোলিয়ন উপাধি দিয়েছিলেন “ফ্রান্সের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান“ হিসেবে।

Tags: বিজ্ঞানী
Dipto Barua

Dipto Barua

Related Posts

যাকারিয়া আল রাযি-Abu Bakr al-Razi Science Bee
বিজ্ঞানী

যাকারিয়া আল রাযি: চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র

20 July 2022
বিজ্ঞান ব্লগ Science Bee
বিজ্ঞানী

ওমর খৈয়াম: একজন কবি, একজন গণিতবিদ

7 February 2022
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০২১ কেন পেলেন তাঁরা?
নতুন আবিষ্কার

চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০২১ কেন পেলেন তাঁরা?

5 October 2021
Science Bee Blog
অনুপ্রেরণা

টেরেন্স টাও- এই প্রজন্মের সেরা গণিতবীদের গল্প!

31 August 2021
নাম কিভাবে আমাদের ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করে?
অনুপ্রেরণা

নাম কিভাবে আমাদের ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করে?

12 July 2021
ড. মাহবুব মজুমদার: এক প্রতিভাবান অধ্যাপক, দেশের টানে ছেড়ে এসেছেন বিদেশের জীবন!
অনুপ্রেরণা

ড. মাহবুব মজুমদার: এক প্রতিভাবান অধ্যাপক, দেশের টানে ছেড়ে এসেছেন বিদেশের জীবন!

26 May 2021

© 2021 Science Bee - Designed & Developed by Mobin Sikder.

  • বিজ্ঞান সংবাদ
  • প্রশ্নোত্তর
  • নিয়মাবলি
  • আমাদের লেখা
    • ফলিত বিজ্ঞান
    • সায়েন্স ফিকশন
    • স্কিল ডেভেলপমেন্ট
    • টেকনোলোজি
      • ইন্টারনেট
      • এপ্লিকেশন
      • রোবটিক্স
      • ইলেক্ট্রোনিক্স
      • সাই-ফাই মুভি
    • সৃষ্টিতত্ত্ব
    • এডভেঞ্চার
    • সাবজেক্ট রিভিউ
    • অনুপ্রেরণা
    • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • অ্যারোস্পেস

© 2021 Science Bee - Designed & Developed by Mobin Sikder.

error: Alert: Content is protected !!