২০৫০, র্যান্ডম চারটি সংখ্যা…মাত্র হ্যাপটিক গ্লভস আর ভি আর টা খুলে দম নিলাম।খুবই ক্লান্তিকর,আর তখনই যখন একটা হাড়ভাঙা লড়াই এর পর আসলে পরাজয় ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না।বলছি ২০৫০ সাল এর কোন এক জুনের কথা,তারিখ মনে নেই,মনে রাখার দরকারই নেই।
তারিখ মনে রাখার আলাদা লোক আছে,সত্যি বলতে কি…..সামান্যতম কাজে মনিটর করার জন্যও লোক আছে এখন।তবে এরা আসলে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক…কোন এক বিশেষ ভাগ্য নিয়ে এদের জন্ম হয়েছিল বলে এখনো এরা নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করে।
তৃতীয় শ্রেণীর লোকরা এক রকম জীবন্ত লাশ…হয়তো,পথে ঘাটে চলতে ফিরতে দুই চারজনের সাথে দেখা হয়ে যাবে আপনার,এক বস্তা রুটির জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত।আর প্রথম শ্রেণী!তাদের কথা আর নাইই বা বলি….সার্ভার ঘেটে পুরাণ এর একটা কালেকশন পেয়েছিলাম,তাদের দেবতাদের সাথেই তুলনা করা যায়।
বলছি ২০৫০ সাল এর কোন এক জুন মাসের কথা,তারিখ এর কথা বলা অবান্তর।পৃথিবীর মানুষের অনেক স্বপ্ন ছিল।মহামারীর আক্রমণ,ভূমিকম্প আর সমুদ্র এর উচ্চতা বৃদ্ধির মত ক্ষত সারিয়ে মানুষ আবার স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল যখন মঙল গ্রহ আর ইউরোপার অভিযাত্রী দল প্রাণ নিয়ে ফিরে এসে জানালো,প্রাণ সম্ভব সেখানে আর সেটা তৈরিই।তখনও পৃথিবীর সব সম্পদের মালিক মাত্র 1% লোক,আর তাদের হাত ধরে বিশাল পৃথিবীর চার ভাগের এক ভাগ পাড়ি জমালো মঙ্গলে….দ্বিতীয় আর তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিকদের পেছনে ফেলে,কেই বা চায় আর এমন পরিবেশে থাকতে যেখানে ডারউইন গেম এর মূল কথাই শেষ কথা?
Only Fittest Can Survive,এই ডারউইন গেম থিওরির জনকও এক প্রথম শ্রেণীর নাগরিক…হাস্যকর না?
বলছি ২০৫০ সালের কোন এক জুন মাসের কথা,প্রতিটা দিনই একটা নতুন দিন,তারিখ আর মাসের হিসাব শুধুই অর্থহীন কিছু সংখ্যা।বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে,যেমনটা কল্পনা করেছিলো বিজ্ঞানীরা।অটোমেটেড ইঞ্জিন আর রিভার্স সার্কিট প্রযুক্তির জন্য কয়লা, গ্যাস শেষ হওয়ার পরেও চিন্তা নেই,রাস্তাতে ঘুরে বেড়ায় কিছু ভাসমান যন্ত্র….তবে বিজ্ঞানীরা হয়তো কল্পনা করেননি…এই সব হাইটেক রাস্তার পাশেও ভিখারীরা জটলা করে শুয়ে থাকবে।মনে আছে,সেই তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিকদের কথা,যারা সামান্য খাবারের জন্য জীবন দিতে রাজি ছিল?আমি তাদেরই একজন।
এমন মরণ পণ করা নাগরিকদের খুজে বের করে প্রফেশনাল স্কাউটরা,তারপর একরকম ধরে নিয়ে আসে সেল নামক এক প্রতিষ্ঠানে।সিঙ্গেল স্ট্রোক ক্লিনার প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুছে ফেলা হয় অপ্রয়োজনীয় স্মৃতি, তারপর চার বছর ধরে গড়ে পিটে তৈরি করা হয় গ্লাডিয়েটর।গ্লাডিয়েটররা আসল যোদ্ধা,কিন্তু এদের যুদ্ধ হয় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর ভেতর,কিন্তু মৃত্যু হয় আসল কোন হাবের ভেতর, হয়তো প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে।
তাই যদি মনে করেন আপনার ছেলে বা মেয়ে হারিয়ে গেছে,এবং আশেপাশে স্কাউট এর সন্ধান মেলে,চিন্তা করবেন না….একটা বিশাল সেলের ছোট কামরায় সে ভালোই আছে হয়তো,অন্তত ধর্ষণ আর অঙহানির থেকে তো ভাল,তাই না?সফল গ্লাডিয়েটররা দ্বিতীয় শ্রেণীর সমান মর্যাদা পায়,আর বিফল রা…..শুধু হারিয়ে যায়।ডারউইন গেম আবার বারবার নিজের রূপে ফিরে আসে এসব ভি আর ম্যাচ গুলোতে।
এগুলো পড়তে ভুলবেন না! Covidiot: নতুন সময়ের করোনা বলদদের গল্প প্রফেসর নাডুস ও হিঞ্চিগুবাসীদের গোপন চুক্তি (বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী) |
আসলে সবাই স্বপ্ন দেখে।দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষরা প্রথম শ্রেণীর হবার,তৃতীয় শ্রেণীররা দ্বিতীয় শ্রেণীর হবার আর গ্লাডিয়েটররা একটা ম্যাচ জিতে একদিন বেচে থাকার….প্রথম শ্রেণীর মানুষগুলোও কি স্বপ্ন দেখে?হয়তো দেখে,কিংবা নয়।
যাই হোক,লাস্ট একটা রাউন্ড বাকি…..এটা জিতলে তবে টাই হবে,কাউকে মরতে হবে না।হ্যাপটিক গ্লভস টা শক্ত করে পড়ে নিলাম…আর বিড়বিড় করলাম রিমাস্টার করা সাইবার পাঙ্ক সিরিজের একটা ডায়লগ,
In this city of Dream,I am a Great Dreamer.