চলো, রসায়ন নিয়ে সাবজেক্ট রিভিউ জানার আগে জেনে আসি। নেইলপলিশ রিমুভার তো দেখেছি সবাই তাই না?
অনেকে চশমার গ্লাস পরিষ্কার করতেও কিন্তু এটা ব্যবহার করি। কিন্তু কখনও ভেবেছো, নেইল পলিশ রিমুভার এমন কি জিনিস যার একটা ছোয়াতেই নেইলপলিশের অস্তিত্ব সুদ্ধ দূর হয়ে যায়?
কখনও ভেবেছো, পেটে গ্যাস ফর্মেশন হলে আমরা কেনই বা অ্যান্টাসিড খাই? কেন লেবুর শরবত খাই না!! কেনই বা কোথাও কেটে গেলে ব্যবহার করি ডেটল কিংবা স্যাভলন, কেন সাবান নয়?
এমন কিছু মজার মজার প্রশ্নের হাজার হাজার লজিকাল উত্তরের বাজারের দেখা পেতে চাইলে তোমাকে পড়তে হবে ওয়ান এন্ড অনলি “দ্যা ডিপার্টমেন্ট অফ রসায়ন”তে। (নেইল পলিশ এবং গ্যাস ফর্মেশনের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে সায়েন্স বী খুব দ্রুতই হাজির হয়ে যাবে, চিন্তা করো না)
তুমি যদি একান্তভাবে রসায়ন পড়তে চাও তাহলে নিজেকে মানসিক ভাবে তৈরি করে নাও। কারণ, রসায়নে পড়তে হয় বিভিন্ন রকমের পদার্থ, তাদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম, তারা কী ভাবে একে অপরের সঙ্গে মিশে এক বা একাধিক নতুন পদার্থ তৈরি করে, যদি নতুন কোনও পদার্থ তৈরি করে তা হলে সেই পদার্থটির ধর্ম কী ইত্যাদি।
পাশাপাশি একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া কিভাবে সংঘটিত হবে, পর্যায় সারণিতে কোন মৌলের অবস্থান কোথায়, তাদের ধর্ম, মৌলগুলির আন্তঃসম্পর্ক রসায়ন শাস্ত্রের এই প্রথম ধাপগুলি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণাটা অবশ্যই থাকতে হবে।
মূলত রসায়ন এর পুরো বিষয়টিই আমাদের জীবনের প্রতিটি দিনের সাথে সম্পর্কিত। আমাদের শরীরেও রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমেই শক্তি উৎপাদন হয়। তাছাড়া আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কত কত জিনিস ব্যবহার করছি, হোক সেটা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত মাজার টুথপেস্ট, হোক সেটা খাবার, অথবা ওষুধপত্র যেটাই হোক সবকিছু বিভিন্ন রাসায়নিক কারখানাগুলোতেই তৈরী হয়।
আরও পড়ুনঃ কী হবে যদি পর্যায় সারণির ১১৮ টি মৌল একসাথে নিয়ে ঝাঁকানো হয়?
এই কাজগুলো একজন অভিজ্ঞ রসায়নবিদই করে থাকেন। তবে অনেকরই ভুল ধারণা যে রসায়নবিদ হওয়া মানেই তার কাজ শুধুমাত্র ল্যাব কেন্দ্রিক। অর্থাৎ অ্যাপ্রন পড়ে হাতে টেস্টটিউব নিয়ে শুধু একটার পর একটা বিক্রিয়াই করতে থাকবে। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও এমন নয়। শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে একজন দক্ষ রসায়নবিদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আর একজন রসায়নবিদের জন্যও বর্তমান ফিল্ডে প্রচুর জব সেক্টর ফিল্ড রয়েছে। তবে বেশিরভাগই এই জব সেক্টরগুলোর সঙ্গে পরিচিত নয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ওষুধ কোম্পানি আছে যেখানে একজন রসায়নবিদ ছাড়া একটি সফল কোম্পানি চিন্তাও করা যায় না।
রসায়নিক কোম্পানি –
বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন (BCIC), কোহিনূর কেমিকেল, জিডিএস কেমিক্যাল কোম্পানী, IMPRESS CHEMICAL BD, Biolink International, A.K.M International Trading Company Ltd, Jamuna Group, Pineer Equipment and Chemical Co, Remex Corporation Ltd, Prodip Chemical & Company এমন আরো অসংখ্য রাসায়নিক কোম্পানী।
সরকারি ও বেসরকারি ল্যাবরেটরি –
বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল (BCSIR) – (এখানে রসায়নবিদদের জন্য ৩ টা ফ্যাকাল্টি রয়েছে), Institute of Fuel Research & Development (IFRD), Institute of Mining; Mineralogy & Metallurgy (IMMM), Material Chemistry Research Lab – DU , Bangladesh Standards And Testing Institution, কেমটেক বাংলাদেশ, ম্যাটেরিয়াল কেমিস্ট্রি রিসার্চ ল্যাব, PetroBangla ইত্যাদি।
পরিবেশগত সংস্থা – Bangladesh Youth Environmental Initiative, Environment and Social Development Organization, Ambala Foundation ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞ গবেষণা সংস্থা এবং পরামর্শমূলক – Bangladesh Space Research and Remote Sensing Organization, Bangladesh Jute Research Institute, Bangladesh Agricultural Research Council (BARC)
ফার্মাসিউটিক্যাল – Eskayef, ACME, Beximco, Square, INCEPTA ইত্যাদি।
গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি – Beximco Fashion, Square Fashion, Opex Sinha, Fakir Group , Standerd Group Etc.
প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি – RFL, Tanin, Partex, Otobi, Bengal etc.
বেসরকারি ফুড কোম্পানি – Haque, Prince Food, Decco, Basumati Group
ইত্যাদি।
এছাড়া পাবলিক অর্থায়ন গবেষণা কাউন্সিল, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা, সামগ্রী ও গ্রাহক পণ্য কোম্পানী, প্রযোজক কোম্পানী তো রয়েছেই।
কেউ স্নাতক স্তরে রসায়ন নিয়ে পড়ে যদি ভবিষ্যতে গবেষণার কথা ভাবে তা হলে তার কাছেও হরেক বিকল্প রয়েছে। যেমন এখন রসায়নের ছাত্রছাত্রীরা স্পেশালাইজেশন করতে পারে–
বায়োকেমিস্ট্রি,
সিনথেটিক বা ইনঅর্গ্যানিক কেমিস্ট্রি, বায়োঅর্গ্যানিক এবং বায়োইনঅর্গ্যানিক কেমিস্ট্রি,
বায়োমলিকিউলস এবং বায়ো মিমিকস,
ড্রাগ ডিজাইন এবং ড্রাগ ডেলিভারি সিস্টেমস, অর্গ্যানোমেটালিক এবং সুপ্রামলিকিউলার কেমিস্ট্রি,
কম্পিউটেশনাল এবং থিয়োরেটিক্যাল কেমিস্ট্রি,
সলিড স্টেট এবং সফ্ট কনডেন্সড ম্যাটার, কোলয়েডস এবং ইন্টারফেসেজ,
রাবার এবং পলিমারস,
মেটাল,
সেরামিক এবং কম্পোজিটস,
ক্যাটালিসিস,
ফোটোকেমিস্ট্রি এবং লিথোগ্রাফি, ন্যানোটেকনোলজি ইত্যাদিতে।
————————–————————–————————–————————
বর্তমানে রসায়নে পড়লে তোমরা যেসব টপিকের কোর্সগুলো এনজয় করতে পারবে–
Analytical Chemistry
Organic Reaction Mechanism.
Natural Products and Carbohydrates.
Organometallic Chemistry.
Jute and Cellulose.
Medicinal Chemistry.
Development of Analytical techniques.
Analysis of Water, Soil, and biological samples.
Study of metal-drug interactions
Environmental Chemistry
Surface Chemistry and Adsorption phenomena.
Photochemistry.
Synthetic Organic Chemistry.
Pesticide residues.
Inorganic Polymers including, Phosphorus-Nitrogen, Sulphur-Nitrogen, and Silicon Compounds.
X-ray crystallographic studies and solid-state Chemistry.
Co-ordination Chemistry.
Catalysis.
Reaction Kinetics.
Monitoring of soil, water, and air pollution.
Development of pollutants remedial methods from water.
Characterization of different organic pollutants present in water and soil.
Electro-chemistry and Electro-analytical Methods.
Polymer Chemistry.
Bio-inorganic Chemistry.
(শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে কোর্স করাতে পারে)
গুণীজনে কহেন, বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে সংযুক্ততা সৃষ্টি করে রসায়ন। রসায়ন তোমাকে বাইরের প্রকৃতির একদম ভেতরে নিয়ে যাবে। রসায়নে পরে একটা বড় ব্যক্তিগত সুবিধা হলো এর মাধ্যমে তোমার বিভিন্ন প্রোডাক্ট (ফুড, ড্রাগস, মেডিসিন) সম্পর্কে ধারনা আসবে যার ফলে তুমি ও তোমার পরিবার ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিষক্রিয়া থেকে নিরাপদ থাকতে পারবে।
তবে যদি পদার্থের ধর্ম, বিক্রিয়া, যৌগ এগুলো বুঝার মত ধৈর্য্য ধারন করতে পারো, নতুন নতুন পদার্থ গঠনের উদ্ভাবনী চিন্তা লালন করতে পারো তবে,
You Are going to be a Boss! You are Welcome In The
“Department of CHEMISTRY”