পিঠা উৎসবে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে নানান পিঠার স্টল দেওয়ার পরিকল্পনা করলাম।তাই এর আয়োজনে, আমার বন্ধুরা অনেক জিনিসপত্র কিনে আনল আর আমি তা বের করে দেখতেছিলাম সব ঠিকঠাক আছে কি না। সব বের করার পর, থলের নিচে দেখলাম ছোট্ট একটা প্যাকেট পরে আছে, বের করে নাম দেখলাম, এটা জাফরান। দেখতে সুন্দরই লাগতেছিল। তারপর মূল্য দেখে তো আমি অবাক!
কি এমন আছে এতে যে এতো বেশি মূল্য? তাই আমার জাফরান সম্পর্কে জানতে ইচ্ছে হলো এবং বিভিন্ন সোর্স থেকে এ সম্পর্কে পড়া শুরু করলাম।প্রথমে আমি শুধু জানতাম এটা খাবারের স্বাদ বাড়ায় কিন্তু এর যে কত উপকারিতা তা জানলে আপনারও এর বেশি মূল্য কমই মনে হবে,যেমনটা আমার মনে হয়েছিল।
কথা আর না বাড়ায়।চলুন জাফরান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
প্রথমে জেনে নিই,জাফরান আসলেই কী?
জাফরান হল বিশ্বের সর্বাধিক ব্যয়বহুল মশলা – এক পাউন্ড (৪৫০ গ্রাম) যার দাম ৫০০ থেকে ৫,০০০ মার্কিন ডলার।জাফরান আসলে ক্রোকাস সেটিভাস(Crocus sativus) ফুলের গর্ভমুন্ড,সাধারণত “জাফরান ক্রোকস ” নামে পরিচিত।
এটি গ্রিসে উদ্ভূত হয়েছিল,যেখানে এটি ঔষধি গুণের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কর্মপ্রেরণা বাড়ানোর জন্য, স্মৃতিশক্তির উন্নতি করতে লোকেরা জাফরান খেয়ে থাকেন।আনুমানিক ৩৫০০ বছর ধরে মানুষ জাফরান চাষ ও ব্যবহার করে আসছে, যা ঔষধ, রং, সুগন্ধি ও মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
জাফরানের অন্য একটি নাম কেশর। একে ইংরেজিতে বলে স্যাফরন। জাফরানের মূল্য অনেক বেশি,তা তো জানলাম,কিন্তু কেন জাফরান এত দামি?
এর মূল কারণ এটির চাষ ও সংগ্রহ পদ্ধতি। জাফরান সংগ্রহের পুরো পদ্ধতিটাই হাতে হাতে করতে হয়। আর এটি বেশ সময়সাপেক্ষও বটে। রান্নার স্বাদ বাড়াতে যে মসলাটি আপনি ব্যবহার করছেন, সেটির মাত্র এক পাউন্ড অর্থাৎ ০.৪৫ কেজি ওজন হতেই ১ লাখ ৭০ হাজারটি ফুলের প্রয়োজন হয়।যেসব দেশে জাফরান চাষিদের জন্য আয়ের উৎস, যেমন আফগানিস্তান থেকে মরক্কোতে ক্রোকাস ফুল সংগ্রহ করা হয় ভোরবেলায়, নইলে সূর্যের অতিরিক্ত তাপে ফুল নষ্ট হয়ে যায়।
এই ফুল বছরে মাত্র একবারই চাষ করা যায়। প্রতিটি ফুলে মাত্র তিনটি সুতার মতো চিকন গর্ভমুন্ড পাওয়া যায়। একবার গাছে ফুল এসে গেলে, ফুল থেকে জাফরান সরানোর কাজ শুরু করেন শ্রমিকরা। ১ পাউন্ড জাফরান সংগ্রহ করতে শ্রমিকদের ৪০ ঘণ্টা সময় লাগে।যদি ওজনের তুলনা করেন, এটি নিঃসন্দেহে স্বর্ণের চেয়ে দামী। তাই জাফরানকে “রেড গোল্ড”ও বলা হয়।
এখন মনে প্রশ্ন আসতে পারে,এতো দাম দিয়ে এটা কেন খেতে যাবো?
এক চুটকি কেশরের যে এতো গুণ জানলে আপনি অবাক হবেন।আচ্ছা, বিস্তারিত আলোচনা করছি-
১. একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
জাফরানে একটি চিত্তাকর্ষক বিভিন্ন যৌগ রয়েছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস হিসাবে কাজ করে -এমন অণু যা আপনার কোষকে ফ্রি র্যাডিক্যালস এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
জাফরান অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির মধ্যে ক্রোকিন, ক্রোসটিন, সাফ্রানাল এবং কেম্পফেরল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ক্রোকিন এবং ক্রোসটিন হল ক্যারোটিনয়েড রঞ্জক এবং জাফরানের লাল রঙের জন্য দায়ী। উভয় যৌগের এন্টিডিপ্রেসেন্ট বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে,যা মস্তিষ্কেরn কোষগুলিকে বৃদ্ধিমূলক ক্ষতির বিরুদ্ধে রক্ষা করতে পারে, প্রদাহকে উন্নত করতে পারে, ক্ষুধা কমায় এবং ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে।
সাফরানাল জাফরানকে স্বতন্ত্র স্বাদ এবং গন্ধ দেয়। গবেষণা দেখায় যে এটি আপনার মেজাজ, স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষমতা উন্নত করতে পারে, পাশাপাশি আপনার মস্তিষ্কের কোষগুলিকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে পারে।
কেম্পফেরল জাফরান ফুলের পাপড়িগুলিতে পাওয়া যায়। এই যৌগটি স্বাস্থ্য সুবিধার সাথে যুক্ত,যেমন প্রদাহ কমায়, অ্যান্টিক্যান্সার এবং অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এ সাহায্য করে।
২. মেজাজ উন্নত করতে পারে এবং ডিপ্রেশনীয় লক্ষণগুলির চিকিৎসায় ব্যবহৃত।
জাফরানকে ” উজ্জ্বল মশলা” বলা হয়।এটি কেবল তার পৃথক রঙের কারণে নয়, এটি আপনার মেজাজ উজ্জ্বল/ প্রফুল্ল করতেও সহায়তা করতে পারে ।
পাঁচটি সমীক্ষার পর্যালোচনাতে, হালকা থেকে মাঝারি ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলির চিকিৎসা করার সময় (placebos-সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসার ঔষধ )প্লেসবোসের তুলনায় জাফরান পরিপূরক হিসেবে উল্লেখযোগ্যভাবে কার্যকর ছিল।
অন্যান্য গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম জাফরান গ্রহণ,ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ফ্লুওক্সেটিন, ইমিপ্রামাইন এবং সিটালপ্রামের (Fluoxetine, Imipramine, and Citalopram)মতো কার্যকর।এছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসার তুলনায় জাফরান এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম ।জাফরান পাপড়িও হালকা থেকে মাঝারি ডিপ্রেশনের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে মনে হয়।
যদিও উক্ত অনুসন্ধানগুলি প্রতিশ্রুতিময়,ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় জাফরানকে রিকমেন্ড করার আগে,এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন…
৩. ক্যান্সার-লড়াই করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
জাফরানটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির পরিমাণ বেশি, যা ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলগুলিকে নিরপেক্ষ করতে সহায়তা করে।ফ্রি র্যাডিকেলগুলির ধ্বংস ক্যান্সারের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের সাথে যুক্ত।
টেস্ট-টিউব স্টাডিতে দেখা যায়, জাফরান এবং এর যৌগগুলি কোলন ক্যান্সারের কোষগুলিকে বাছাই করে হত্যা বা তাদের বৃদ্ধি দমন করে এবং সাধারণ কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। এই প্রভাবটি ত্বক, অস্থি মজ্জা, প্রোস্টেট, ফুসফুস, স্তন, জরায়ু এবং ক্যান্সারের অন্যান্য কোষগুলিতেও প্রযোজ্য।
টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় আরও দেখা যায়,যে জাফরানের প্রধান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্রোসিন ক্যান্সার কোষকে কেমোথেরাপির ওষুধের জন্য আরও সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।টেস্ট-টিউব স্টাডির এই গবেষণাগুলো আশাব্যঞ্জক হলেও, জাফরানের অ্যান্টিক্যান্সার প্রভাবগুলি মানুষের মধ্যে খুব কমই অধ্যয়ন করা হয়।তাই আরও গবেষণা করা দরকার।
৪. পিএমএসের লক্ষণগুলি হ্রাস করতে পারে।
প্রাক-মাসিক সিন্ড্রোম (PMS) এমন একটি শব্দ যা ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে ঘটে যাওয়া শারীরিক এবং মানসিক লক্ষণগুলিকে বর্ণনা করে।
গবেষণায় দেখায় যে জাফরান পিএমএস উপসর্গগুলিতে চিকিৎসা করতে সহায়তা করতে পারে।
মহিলাদের মধ্যে ২০-৪৫ বছর বয়সী, প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম জাফরান গ্রহণ করা পিএমএস উপসর্গগুলি যেমন: বিরক্তি, মাথাব্যথা এবং ব্যথা এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লেসবো থেকে বেশি কার্যকর ছিল।
অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে শুধু ২০ মিনিটের জন্য জাফরানের গন্ধ নিলে, পিএমএসের লক্ষণগুলি যেমন উদ্বেগ এবং স্ট্রেস হরমোন করটিসোলের স্তরকে হ্রাস করতে সাহায্য করে।
৫.(Aphrodisiac) এফ্রোডিসিয়াক হিসাবে কাজ করতে পারে।
এফ্রোডিসিয়াকস হল এমন খাবার বা পরিপূরক যা আপনার লিবিডো(যৌনকামনা) বাড়াতে সহায়তা করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম জাফরান ৪ সপ্তাহ ধরে গ্রহণের ফলে এন্টিডিপ্রেসেন্ট-সম্পর্কিত ইরেক্টিল ডিসফংশান সহ পুরুষদের মধ্যে ইরেক্টাইল ফাংশন উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়।
অধিকন্তু, গবেষণার বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে জাফরান গ্রহণের ফলে ,ইরেক্টাইল ফাংশন, যৌনশক্তি এবং সামগ্রিক তৃপ্তি উন্নত করে তবে বীর্যের বৈশিষ্ট্য উন্নত করে না।
এন্টিডিপ্রেসেন্ট গ্রহণের ফলে যেসব মহিলাদের যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যায়,তাদের চার সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম জাফরান যৌন-সম্পর্কিত ব্যথা হ্রাস করে এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা এবং তৈলাক্তকরণ বৃদ্ধি করে।
৬. ক্ষুধা হ্রাস এবং ওজন কমাতে পারে।
স্ন্যাকিং(Snacking) একটি সাধারণ অভ্যাস যা আপনাকে অযাচিত ওজন বাড়ানোর ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।গবেষণা অনুসারে, জাফরান আপনার ক্ষুধা নিবারণের মাধ্যমে স্ন্যাকিং রোধে সহায়তা করতে পারে।
গবেষণায় দেখা যায়, একটি জাফরান গ্রহণের ফলে ক্ষুধা, বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই), কোমরের পরিধি এবং মোট ফ্যাট ভর হ্রাস করতে সহায়তা করে।
তবে, কীভাবে জাফরান ক্ষুধা নিবারণ করে এবং ওজন হ্রাসে সহায়তা করে তা বিজ্ঞানীরা অনিশ্চিত । একটি তত্ত্ব হল জাফরান আপনার মেজাজকে উন্নত করে, ফলস্বরূপ আপনার খাওয়ার ইচ্ছাকে হ্রাস করে।
৭.হৃদরোগের ঝুঁকির কারণগুলি হ্রাস করতে পারে।
প্রাণী এবং টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় দেখা যায় যে জাফরানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি রক্তের কোলেস্টেরল হ্রাস করতে পারে। রক্তনালী এবং ধমনীর ব্লক হওয়া থেকে রোধ করতে পারে।
৮.ত্বকের যত্ন : সুন্দর ত্বক পেতে নিয়মিত জাফরান ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে, গায়ের রং পরিষ্কার করে তুলতে সাহায্য করে । তবে এর মাত্রারিক্ত ব্যবহার ত্বকের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতা পারে।
জাফরানের আরও স্বাস্থ্য সুবিধার রয়েছে যা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। এর মধ্যে
★রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে পারেঃজাফরান রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে
ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
★দৃষ্টিশক্তি এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে : পরীক্ষায় দেখা গেছে, জাফরানের উপাদান সাফ্রানাল রেটিনার ক্ষয় রোধ করে।এটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে এবং চোখের ছানি পড়ার সমস্যা প্রতিরোধ করে।
জাফরানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে পারে।
★লিভারকে সুরক্ষিত রাখে : যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা জাফরান ব্যবহার করতে পারেন। এর মধ্যে উপস্থিত ক্রোসিন নামক বায়োকেমিক্যাল লিভারকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
★ চুল পড়া কমায় : চুল পড়ার সমস্যা দূর করতে জাফরানের জুড়ি নেই। চুলে জাফরান লাগালে চুল পড়া কম হবে, নতুন চুল গজাবে সেইসঙ্গে চুল হবে ঝলমলে এবং মজবুত।
গর্ভাবস্থায় জাফরান গ্রহণ করা কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, গর্ভাবস্থায় জাফরান গ্রহণ নিরাপদ, কারণ এতে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। এটি স্ট্রেস, ব্যথা-যন্ত্রণা, মেজাজের দোলচল এবং গর্ভাবস্থার বিভিন্ন অসুবিধা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। তবে প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করলে জাফরানেরও কিছু বিরূপ প্রভাব পড়ে। এটি অকাল প্রসবের কারণ হতে পারে।তাই গর্ভধারণের পর পঞ্চম মাস শুরু হলে তবেই শুধুমাত্র জাফরান গ্রহণ করুন, কারণ এই সময়ে গর্ভাবস্থা স্থিতিশীল থাকে এবং অকাল প্রসবের কারণে শিশুর বিপদে পড়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়।
আসলে জাফরানের গুণাবলীর কথা বলতে গেলে লিখতে আমার হাত আর পড়তে আপনাদের মুখ ব্যাথা করতে পারে।তাই আজ এটুকুই বললাম। এখন কথা হচ্ছে জাফরান আপনি ব্যবহার করবেন কীভাবে??
জাফরান যে কেবলমাত্র খাবারকে সুস্বাদু করে তাই নয়, খাবারে সুন্দর রং আনে। কী খাবার বানাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করছে কীভাবে জাফরান ব্যবহার করবেন। খাবারে কীভাবে জাফরান ব্যবহার করবেন রইল কিছু টিপস –
জাফরান চূর্ণ : বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন জাফরান গুঁড়ো। শিল নোড়াতে গুঁড়ো করে নিন। অসুবিধা হলে তাতে সামান্য চিনি মিশিয়ে নিন, গুঁড়ো করতে সুবিধা হবে।
ভেজানো জাফরান : জাফরান গুঁড়োর সঙ্গে সামান্য জল মিশিয়ে কিছুদিন ব্যবহার করতে পারেন। আবার জাফরান গুঁড়োর সঙ্গে দুধ, ভিনিগার মিশিয়ে অনেক দিন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন।
দুধের সঙ্গে জাফরান : জাফরান দুধ তৈরি করতে পারেন। এক কাপ দুধে এক চিমটি জাফরান এবং ২ চামচ চিনি মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। আপনার প্রতিদিনের রুটিনে রাখুন জাফরান দুধ চা, এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
যদিও জাফরান বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মশলা, আপনার রেসিপিগুলিতে প্রায়শই একটি চিমটির বেশি প্রয়োজন হয় না।
অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ,জাফরানেরও কিছু ঝুঁকির সীমা রয়েছে। চলুন তা নিয়ে আলোচনা করা যাক-
স্বাভাবিক মাত্রায় জাফরানের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দেখা যায় না। সাধারণত স্বাভাবিক মাত্রায় এটি নিরাপদ।
মানুষ নিরাপদে প্রতিদিন ১.৫ গ্রাম পর্যন্ত জাফরান খেতে পারে। তবে, প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম জাফরান স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে যথেষ্ট।
অন্যদিকে, ৫ গ্রাম বা তার বেশি হল উচ্চ মাত্রা,যা বিষাক্ত প্রভাব ফেলতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের উচ্চ মাত্রা এড়ানো উচিত, কারণ এটি গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।
যে কোনও পরিপূরক হিসাবে,জাফরান গ্রহণের আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
জাফরানের সাথে আরেকটি সমস্যা – বিশেষত জাফরান পাউডার – এটি অন্যান্য উপাদান যেমন বীট, লাল বর্ণযুক্ত রেশম তন্তুর সাথে ভেজাল হতে পারে ।ভেজাল পণ্য এড়াতে কোনও
নামী ব্র্যান্ড বা স্টোর থেকে জাফরান কিনুন।জাফরান যদি খুব সস্তা দেখা যায় তবে এড়ানো ভাল।
জাফরান যদিও অনেক দামী।,এর এতো গুণাগুণ দেখে আমারতো স্বর্ণের গহনা না কিনে,জাফরানের স্বাস্থ্যগত সুবিধাসমূহ পেতে আমার প্রিয় খাবারগুলিতে জাফরানকে যুক্ত করতে মন চাই। আপনার কী মতামত?? জানাতে ভুলবেন না
https://www.healthline.com/nutrition/saffron
https://www.stylecraze.com/bengali/jafraner-upokarita-in-bengali/